প্রথম পর্বের পর...
বর্তমানে টাকা দিয়ে চাকুরী নিতে গিয়ে অনেকেই অগ্রীম টাকা দিয়েছেন এবং অর্থ ক্ষতির সম্মুক্ষীন হয়েছেন, যার অধিকাংশই মধ্যবিত্ত পরিবারের সাথে ঘটেছে । তাই, যদি অগ্রীম টাকা দিয়ে চাকুরী নিতে চান তবে প্রথম কাজ হচ্ছে ব্যক্তি নির্বাচন অর্থাৎ যিনি আপনাকে চাকুরী দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি সত্যিই উপযুক্ত কিনা? ভুল লোকের কাছে গেলে আপনার সময় এবং সুযোগ দুটোই নষ্ট হবে । কে যে সঠিক লোক তা বোঝা যদিও খুব কঠিন তবে কিছু বিষয় মাথায় রেখে কাজ করবেন, যেমন :
আপনি যাকে টাকা দিচ্ছেন, আপনি তাকে কতটুকু চেনেন? কিভাবে চেনেন? কার মাধ্যমে চেনেন? সে 'সব পারি' এই রকমের ভাব দেখাচ্ছে কিনা? তার মুখের ভাষা কেমন? তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কৌশলে জানার চেষ্টা করুন । সে লোকটির বয়স কেমন? চাকুরী দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারনত ৪৫ থেকে ৬০ বছরের মানুষের সফলতা বেশি হওয়ার কথা কারন তার নিজের ভিতরে ক্ষমতা অর্জন করতে করতেই এই সময় লাগবে । আর একটি বিষয় হচ্ছে কাজটি কি ওই ব্যক্তি নিজে করবেন নাকি কারো সাহায্য নিবেন? আপনি ওই লোকের বাসা বা কোন স্থায়ী ঠিকানা জানেন কিনা? আপনি সেখানে পৌঁছুতে পারবেন কিনা? ওই ব্যক্তি যদি আপনার টাকা দিতে না চায় তবে আপনি তাকে চাপ দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন কিনা? একদম অপরিচিত লোকের লোভনীয় প্রস্তাবে রাজী হওয়ার আগে সময় নিন । হুট করে কাজ করবেন না ।
সাধারনত যারা চাকুরী করেন বা স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে এমন কাওকে টাকা দিলে টাকা তুলতে সুবিধা হয় কারন তাদের সম্মান হারানোর ভয় থাকে তাদের সহকর্মী বা সহ ব্যবসায়ীর কাছে। কিন্তু রাজনৈতিক লোক, মন্ত্রীর পি এস, এ পি এস, ভাই, ভাতিজা, এ..ও.. যাকেই টাকা দেন না কেন ,কাজ না হলে টাকা ফেরত পাওয়া প্রায় অসম্ভব ।
যদি অগ্রীম হিসাবে কেও ৫০০০/ ১০০০০/ ২০০০০ টাকা চায় হাত খরচ হিসাবে, ভুলেও দিবেন না । প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় আপনার পুরো টাকাটাই নষ্ট হল । চাইলে আপনি বলে দেন, কাজ হলে হাত খরচ দ্বিগুন দিয়ে দিবেন ।
যদি অগ্রীম টাকা দেন, ওই ব্যক্তির চেক রেখে দিবেন আর ৩০০ টাকার স্টাম্পে চাকুরীর কথা উল্লেখ করে লিখিত রাখবেন। এই প্রমাণ ভবিষ্যতে যে কোন সময় আপনার কাজে আসবে । আর যদি নিজে কখনো চেক দেন তবে ভুলেও Blank চেক দিবেন না ,এতে পরবর্তীতে সে নিজের ইচ্ছামত টাকার পরিমাণ বসিয়ে নিতে পারে। তবে যে চেকই দেন না কেন, ৩০০ টাকার স্টাম্পে ঘটনা উল্লেখ করে চেকের নাম্বার উল্লেখ করুন । নয়তো, ওই লোক খারাপ হলে আপনার চেক দিয়েই আপনাকে ব্লাকমেইম করতে পারে ।
নিজের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, এদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রেও সাবধান কারন এদের ভিতরেও অনেকে ফটকাবাজ ধরনের হয় । আপনি হয়তোবা ভাবছেন, আমার সাথে এমন করবে না কিন্তু ঘটনা ঘটে গেলে শেষ রক্ষা হবে না ।
জানি একটা চাকরীর জন্য আপনি মরিয়া হয়ে গেছেন । বয়স চলে যাচ্ছে.....সংসারে টানাটানি....বোনের বিয়ে বাদ.... নিজেও বিয়ে করতে পারছেন না......তাই যে কোন মূল্যেই হোক ........ । এই পরিস্থিতিতে আমার এসব কথা আপনার ভাল লাগবে না, এটাও জানি । তবুও বলবো একটু ভেবে সামনের দিকে যান.....হিতে না বিপরীত হয়ে যায় শেষে ।
দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে ,আপনি যার সাহায্য নিচ্ছেন তার কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং বিশ্লষণ করা অর্থাৎ তার কথা যুক্তিযুক্ত কিনা এবং বাস্তবতার সাথে সংগতিপূর্ণ কিনা? এই বিষয়ে তৃতীয় পর্বে উল্লেখ করা হবে ।
চলমান....
সুত্র: "নীরব প্রতিবাদ" পেজ থেকে সংগৃহীত।
ভালো থাকুন | School of Awareness