Wednesday, January 30, 2019

প্রতারক বা বাটপার চেনার কিছু কৌশল এবং আপনার কিছু পদক্ষেপ।


প্রথম পর্বের পর...
বর্তমানে টাকা দিয়ে চাকুরী নিতে গিয়ে অনেকেই অগ্রীম টাকা দিয়েছেন এবং অর্থ ক্ষতির সম্মুক্ষীন হয়েছেন, যার অধিকাংশই মধ্যবিত্ত পরিবারের সাথে ঘটেছে । তাই, যদি অগ্রীম টাকা দিয়ে চাকুরী নিতে চান তবে প্রথম কাজ হচ্ছে ব্যক্তি নির্বাচন অর্থাৎ যিনি আপনাকে চাকুরী দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি সত্যিই উপযুক্ত কিনা? ভুল লোকের কাছে গেলে আপনার সময় এবং সুযোগ দুটোই নষ্ট হবে । কে যে সঠিক লোক তা বোঝা যদিও খুব কঠিন তবে কিছু বিষয় মাথায় রেখে কাজ করবেন, যেমন :

আপনি যাকে টাকা দিচ্ছেন, আপনি তাকে কতটুকু চেনেন? কিভাবে চেনেন? কার মাধ্যমে চেনেন? সে 'সব পারি' এই রকমের ভাব দেখাচ্ছে কিনা? তার মুখের ভাষা কেমন? তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কৌশলে জানার চেষ্টা করুন । সে লোকটির বয়স কেমন? চাকুরী দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারনত ৪৫ থেকে ৬০ বছরের মানুষের সফলতা বেশি হওয়ার কথা কারন তার নিজের ভিতরে ক্ষমতা অর্জন করতে করতেই এই সময় লাগবে । আর একটি বিষয় হচ্ছে কাজটি কি ওই ব্যক্তি নিজে করবেন নাকি কারো সাহায্য নিবেন? আপনি ওই লোকের বাসা বা কোন স্থায়ী ঠিকানা জানেন কিনা? আপনি সেখানে পৌঁছুতে পারবেন কিনা? ওই ব্যক্তি যদি আপনার টাকা দিতে না চায় তবে আপনি তাকে চাপ দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন কিনা? একদম অপরিচিত লোকের লোভনীয় প্রস্তাবে রাজী হওয়ার আগে সময় নিন । হুট করে কাজ করবেন না । 

সাধারনত যারা চাকুরী করেন বা স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে এমন কাওকে টাকা দিলে টাকা তুলতে সুবিধা হয় কারন তাদের সম্মান হারানোর ভয় থাকে তাদের সহকর্মী বা সহ ব্যবসায়ীর কাছে। কিন্তু রাজনৈতিক লোক, মন্ত্রীর পি এস, এ পি এস, ভাই, ভাতিজা, এ..ও.. যাকেই টাকা দেন না কেন ,কাজ না হলে টাকা ফেরত পাওয়া প্রায় অসম্ভব । 

যদি অগ্রীম হিসাবে কেও ৫০০০/ ১০০০০/ ২০০০০ টাকা চায় হাত খরচ হিসাবে, ভুলেও দিবেন না । প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় আপনার পুরো টাকাটাই নষ্ট হল । চাইলে আপনি বলে দেন, কাজ হলে হাত খরচ দ্বিগুন দিয়ে দিবেন ।

যদি অগ্রীম টাকা দেন, ওই ব্যক্তির চেক রেখে দিবেন আর ৩০০ টাকার স্টাম্পে চাকুরীর কথা উল্লেখ করে লিখিত রাখবেন। এই প্রমাণ ভবিষ্যতে যে কোন সময় আপনার কাজে আসবে । আর যদি নিজে কখনো চেক দেন তবে ভুলেও Blank চেক দিবেন না ,এতে পরবর্তীতে সে নিজের ইচ্ছামত টাকার পরিমাণ বসিয়ে নিতে পারে। তবে যে চেকই দেন না কেন, ৩০০ টাকার স্টাম্পে ঘটনা উল্লেখ করে চেকের নাম্বার উল্লেখ করুন । নয়তো, ওই লোক খারাপ হলে আপনার চেক দিয়েই আপনাকে ব্লাকমেইম করতে পারে । 

নিজের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, এদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রেও সাবধান কারন এদের ভিতরেও অনেকে ফটকাবাজ ধরনের হয় । আপনি হয়তোবা ভাবছেন, আমার সাথে এমন করবে না কিন্তু ঘটনা ঘটে গেলে শেষ রক্ষা হবে না । 

জানি একটা চাকরীর জন্য আপনি মরিয়া হয়ে গেছেন । বয়স চলে যাচ্ছে.....সংসারে টানাটানি....বোনের বিয়ে বাদ.... নিজেও বিয়ে করতে পারছেন না......তাই যে কোন মূল্যেই হোক ........ । এই পরিস্থিতিতে আমার এসব কথা আপনার ভাল লাগবে না, এটাও জানি । তবুও বলবো একটু ভেবে সামনের দিকে যান.....হিতে না বিপরীত হয়ে যায় শেষে । 

দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে ,আপনি যার সাহায্য নিচ্ছেন তার কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং বিশ্লষণ করা অর্থাৎ তার কথা যুক্তিযুক্ত কিনা এবং বাস্তবতার সাথে সংগতিপূর্ণ কিনা? এই বিষয়ে তৃতীয় পর্বে উল্লেখ করা হবে ।
চলমান....
সুত্র: "নীরব প্রতিবাদ" পেজ থেকে সংগৃহীত।

ভালো থাকুন | School of Awareness

Wednesday, January 23, 2019

সিঙ্গাপুর গিয়ে আয় করার পরিকল্পনা করলে সচেতক হোন!


সিংগাপুর আসার কথা ভাবছেন? একটু থামুন এবং হিসেব মিলিয়ে নিন।
পাশের বাড়ির কেউ একজন সিঙ্গাপুর গিয়ে ভালো টাকা ইনকাম করছেন। শুরুর বেতন প্রায় ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা। এমনটি শোনেই অনেকে। একবুক আশা নিয়ে প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে ভর্তি হন বাংলাদেশে বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টারে। যেখানে পাশ করে সিঙ্গাপুর আসা যায়।
ভর্তির সময় ট্রেনিং সেন্টারের লোকেরা বলে ট্রেনিং শেষে তাদের মাধ্যমেই সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। পাশ করার পরে কোনো ঝামেলা নেই। সহজেই ভিসা পাওয়া যায়। আসলে কি তাই? না, এতটা সহজ নয় মোটে।
একসময় অবশ্য সহজ ছিল। সেন্টার থেকে সিঙ্গাপুর পাঠানোর সকল ব্যবস্থা করা হতো। এখন সিঙ্গাপুর কাজের চাহিদা অনুযায়ী লোক সংখ্যা অনেক বেশি। যার জন্য চাইলে ট্রেনিং সেন্টারের লোকেরা সহজে লোক পাঠাতে পারে না। পাশ করার পরে পরিচিত কারও মাধ্যমে অথবা দালালের মাধ্যমে আসতে হয়।
একসময় সিঙ্গাপুর আসতে সর্বমোট খরচ হতো এক লাখ আশি হাজার টাকা। দিনে দিনে বেড়ে এখন তা হয়েছে প্রায় দশ লাখ টাকা। এই বিশাল এমাউন্টের টাকা জোগার করতে অনেকে নিজের শেষ সম্বল ভিটামাটি বিক্রি করতে হয়।
স্বপ্ন দেখে সিঙ্গাপুর এসে অল্পসময়ে সকল টাকা শোধ করে ফেলবে। দেশে থেকে দালালদের বলা হয় যেন একটি ভালো কোম্পানিতে আইপি লাগানো হয়। দালালরা ভালো কোম্পানি বলে ফুসলিয়ে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে পাঠায় স্বপ্নের দেশ সিঙ্গাপুরে। তাও আবার একবছরের চুক্তিতে। একবছর পরে নতুন করে কন্ট্রাক্ট করে এভাবে ১৮ বছর থাকা যায়। এমনটিই বলে দালালরা। এখানে আসার পর ভালো কোম্পানি বাদ দিয়ে পরিচিত হতে হয় কোম্পানি নিয়ে তিনটি নতুন শব্দ-
Maincon, Subcon, Supply. 
Maincon হলো সেই সব কোম্পানি যারা Government থেকে সরাসরি কাজ নিয়ে Subcon এর মাধ্যমে কাজ করান। Subcon এর যদি লোকের প্রয়োজন হয় তাহলে Suppy কোম্পানি থেকে লোক নিয়ে এসে কাজ করান।
এতে যারা এসে Maincon কোম্পানিতে কাজ করে তাদের বেসিক সেলারি কম হলেও প্রতিবছর ভিসা নবায়ন করতে তেমন চিন্তা করতে হয় না। তবে এখন ভিন্নরূপ। বেশিরভাগ Subcon যদিও ভিসা নবায়ন করেন, এর বিনিময় কর্মী থেকে $1500 থেকে $2000 ডলার নিয়ে যায়। কিছু কিছু আছে ব্যতিক্রম। তাঁরা টাকা ছাড়াই ভিসা নবায়ন করেন।
আবার কিছু কোম্পানি একবছর পরে বাছাই করে লোক পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু Supply কোম্পানিগুলো একবছর পরে কোনো কর্মীর ভিসাই নবায়ন করেন না। প্রতিবছর নতুন করে লোক নিয়ে আসা তাদের একটি ব্যবসা। কোনো কিছুর বিনিময়ে তারা ভিসা নবায়ন করতে রাজি হয় না। 
দিনের পর দিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে শুধু একটাই আশা নিয়ে। তা হলো একবছর শেষে ভিসার নবায়ন করানো। কিন্তু সবার ভাগ্যে সেটা হয়ে উঠে না। ঋণের বোঝা আর চোখের জল নিয়ে ফিরে যেতে হয় বাড়ী।
তাহলে ভেবে দেখুন যারা ভিটামাটি বিক্রি করে বা লোন করে স্বপ্ন নিয়ে আসেন। তাদের একবছর পর পাঠিয়ে দিলে তাদের কী অবস্থা হয়?
বেশিরভাগই ১৮ ডলার বেসিকে কাজ করে। প্রতি সপ্তাহে রবিবার বন্ধ। দিনে দুই ঘন্টা ওভারটাইম। আবার শানিবার ওভারটাইম নেই। এতে মাসে শ্রমিকের বেতন আসে ৫০০-৫৫০ ডলার। তার মাঝে একমাসে খাওয়া ও যাবতীয় খরচ চলে যায় ২০০- ২৫০ ডলার। বাকি থাকে ২৫০-৩০০ ডলার। ৩০০ ডলার ধরলে বর্তমানে টাকার রেটে আসে বিশ হাজার থেকেও কম । তাহলে এক বছরে আসে প্রায় ২০০০০০৳।
যেখানে আসতে খরচ হয় প্রায় দশ লক্ষ টাকা। বাকি টাকা জলে যায়। সাথে একবছরে শ্রম। আবার নতুন করে আসতে লেগে যায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। যেটা সবার পক্ষে সম্ভব না।
তাই যারা দূর থেকে ভাবছেন সিঙ্গাপুর একটি স্বপ্নের দেশে, তারা এবার ভেবে দেখুন সিঙ্গাপুর আসলে কতটা স্বপ্নের। আসার আগে আরেকবার বসে পড়ুন ক্যালকুলেটর নিয়ে। 
এটা হচ্ছে সম্পূর্ণ বাস্তব এবং সত্য বিশ্বাস টা আপনার কাছে।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Preface to Flop Investment!


স্কুল অব অ্যাওয়ারনেস এর "ফ্লপ ইনভেস্টমেন্ট" বিভাগে বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ না করার পরামর্শ পাবেন।